স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা: জাহিদ মালেক বলেছেন, ওষুধের অনিয়ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিদ্যমান ওষুধ আইনকে আরো যুগোপযোগী ও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে প্রস্তাবিত আইন অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের চলমান প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখতে মানুষকে সুস্থ ও নেশামুক্ত রাখতে হবে। তামাক থেকে দূরে সরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
মন্ত্রী জানান, নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে। নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে ৩৯ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৪৪টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। প্রায় ৩২ কোটি টাকা মূল্যের নকল-ভেজাল ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মমতা হেনা লাভলীর প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, তামাক সেবনের কারণে ১২ লাখ মানুষ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ অকাল পঙ্গুত্বের শিকার হয়। এসব রোগের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সার ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যা প্রধানত ধূমপান ও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে হয়ে থাকে। মুখ গহ্বরের ক্যান্সার, যা প্রধাণত ধোঁয়াবিহীন বিভিন্ন তামাক সেবন, পানের সাথে জর্দা বা সাদাপাতার ব্যবহার এবং মাড়িতে গুল ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে।
তিনি জানান, টোবাকো এটলাস ২০১৮ অনুযায়ী, তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি লোক মৃত্যুবরণ করে। তামাক হচ্ছে এমন একটি ক্ষতিকর পণ্য, যা উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবনÑ প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতির ক্ষতি করে। ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন- দুটোই ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী নেশা। পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতিতেও তামাকের প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক। মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একটি খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে একটি কৌশলপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে।